প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ভিটামিন ডি এর অভাবে কি রোগ হয়? ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ নিয়ে বিস্তারিত জানুন

ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের জন্য অপরিহার্য উপাদান। সাধারণত ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের অভ্যন্তরে উৎপন্ন হয়ে থাকে। ভিটামিন ডি আমাদের শরীরে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস শোষণ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে থাকে।
প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ভিটামিন ডি এর অভাবে কি রোগ হয়


ভিটামিন ডি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। বিভিন্ন সংক্রামক রোগ এর বিরুদ্ধে ভিটামিন ডি প্রতিরোধ গড়ে তুলে। আমাদের শরীরের বিশেষ করে হার ও দাঁতের গঠন ঠিক রাখতে ভিটামিন ডি এর তুলনা নেই।
গবেষণায় দেখা গেছে, ভিটামিন ডি আমাদের হাড়ের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে ত্বকের সুস্থতা ধরে রাখে, এমনকি ক্যান্সারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রমাণও পাওয়া গেছে। ভিটামিন ডি সাধারণত খাবার ও সকালের রোদ থেকে পাওয়া যায়।

ভূমিকা

ভিটামিন ডি হলো এক ধরনের স্টেরয়েড হরমোন যা আমাদের শরীরে আমিষ তৈরিতে নিয়ন্ত্রণকারী হিসেবে ভূমিকা রাখে। এর ঘাটতি হলে সব ধরনের বয়সের মানুষের নানা রকম সমস্যা দেখা দেয়। ভিটামিন ডি এর ঘাটতি হলে শিশুদের রিকেটস রোগ হয়। রিকেটস রোগ হলে বাচ্চাদের পা বেঁকে যায়, মাথার খুলি বড় হয়ে যেতে পারে।
বেশিদিন এই রোগে আক্রান্ত থাকলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে পারে। ভিটামিন ডি এর অভাবের ফলে শরীরে স্বাভাবিক বৃদ্ধি বাথাগ্রস্থ হয়। প্রাপ্তবয়স্ক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ক্ষেত্রে হার ক্ষয় কিংবা ব্যথা সহ নানা সমস্যা তৈরি হয়। অনেকের দৈহিক ওজন কমে যেতে পারে।
আজ আমরা ভিটামিন ডি কি?, এর অভাবে কি রোগ হয়, প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির ভিটামিন ডি এর অভাবে কি রোগ হতে পারে এবং ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ নিয়ে বিস্তারিত জানব।

ভিটামিন কি

ভিটামিন বা খাদ্য প্রাণ হচ্ছে রাসায়নিক উপাদান যা শরীরে অল্প পরিমাণে প্রয়োজন হয়। ভিটামিন বা খাদ্য প্রাণ হচ্ছে মানুষও প্রাণীর স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য এবং কোন কোন খাদ্যবস্তুতে বিদ্যমান কতগুলি জৈব বস্তু বিশেষ যার স্বাভাবিক বৃদ্ধি সুস্বাস্থ্য ও শরীরের কার্যক্ষমতা যথার্থ ভাবে পরিচালনায় সাহায্য করে। সাধারণত আমাদের শরীর ভিটামিন সংশ্লেষণে অক্ষম।

ভিটামিন এর শ্রেণীবিন্যাস

ভিটামিন কে সাধারণত দুটি শ্রেণীতে ভাগ করা হয়।
  • পানিতে দ্রবণীয় ভিটামিন। যেমন ভিটামিন বি, ভিটামিন সি।
  • চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন। যেমন ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে।

ভিটামিন ডি এর পরিচয়

ভিটামিন ডি চর্বিত দ্রবনীয় ভিটামিন যা সূর্যালোকের ভিটামিন নামে পরিচিত। ভিটামিন ডি এর অপর নাম ক্যালসিফেরল। সূর্যালোকের উপস্থিতিতে ত্বকের নিচে ভিটামিন ডি সংশ্লেষিত হয়।

ভিটামিন ডি এর কাজ

  • মজবুত হাড় ও দাঁত গঠনে ভিটামিন ডি প্রয়োজনীয়। হাড়ের খনিজিকরণে এটি সরাসরি কাজ করে।
  • ভিটামিন ডি ক্যালসিয়াম বাইন্ডিং প্রোটিন সংশ্লেষণে ক্ষুদ্রান্ত্রের কোষ কে উদ্দীপ্ত করে যা ক্যালসিয়াম শোষণ ঘটায়।
  • ভিটামিন ডি শরীরের সাধারণ বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।
  • ভিটামিন ডি রক্তের মধ্যে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
  • ভিটামিন ডি রেনাল টিউবের ফসফেট শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে।

ভিটামিন ডি এর উৎস

ভিটামিন ডি এর উৎস ২ ধরনের।
  • প্রাকৃতিক উৎস
  • প্রাণিজ উৎস
প্রাকৃতিক উৎসঃ সূর্যের আলো। (NB: শরীরের ২০% অংশে সূর্যের আলোকে রাখলে ত্বকের নিচে ভিটামিন ডি উৎপন্ন হয়।)
প্রাণিজ উৎসঃ ডিমের কুসুম, ফিস লিভার অয়েল, কড লিভার অয়েল, সার্ক লিভার অয়েল, ফ্যাটি ফিস, মুরগি, দুধ, মাখন, ঘি, মিল্ক পাউডার ইত্যাদি।
(NB: ফলমূল ও সবজিতে ভিটামিন ডি থাকে না)

মানব দেহে ভিটামিন ডি এর দৈনিক চাহিদা

প্রাপ্তবয়স্কঃ 2.5 মাইক্রোগ্রাম (100 IU)
শিশুঃ 5 মাইক্রোগ্রাম (200 IU)
গর্ভবতী ও দুগ্ধবতীঃ 10 মাইক্রোগ্রাম (400 IU)

ভিটামিন ডি এর অভাবে কি রোগ হয়?/ভিটামিন ডি এর অভাবজনিত রোগ

ভিটামিন ডি এর অভাবে প্রধানত হয়ঃ
  • রিকেটস - ভিটামিন ডি এর অভাবে শিশু হাড়ের অপুষ্টি জনিত রোগ বিশেষ।
  • অস্টিওম্যালাসিয়া - কি হচ্ছে হাড়ের নরম বা ভঙ্গুর হয়ে যাওয়া যা বিশেষত্ব গর্ভবতী ও দুগ্ধবতি মেয়েদের হয়ে থাকে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

কমেন্ট করুন

comment url